Discover new books on Goodreads
Meet your next favorite book
Harun Ahmed's Reviews > একটি হাসপাতাল একজন নৃবিজ্ঞানী কয়েকটি ভাঙ্গা হাড়
একটি হাসপাতাল একজন নৃবিজ্ঞানী কয়েকটি ভাঙ্গা হাড়
by
by
৪.৫/৫
কেন যে বইটা এতোদিন পড়বো পড়বো করেও পড়িনি! বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালে যারা পা রেখেছেন তারাই বইটার মধ্যে নিজেকে খুঁজে পাবেন।
২০১২ সালে আমাদের সমাজকর্ম বিভাগ থেকে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের জন্য এক সরকারি মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট এ পাঠানো হয়েছিলো। মানসিক রোগীদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন কাউন্সিলিং। ডাক্তাররা রাউন্ডে এসে একেক রোগীর সামনে সর্বোচ্চ এক মিনিট দাঁড়াতেন। সর্বোচ্চ! "কী অবস্থা? কী ওষুধ চলছে? ওষুধ খাওয়াতে থাকেন।ঠিক হয়ে যাবে।" ব্যস! রোগী দেখা শেষ।রোগের কী অবস্থা, রোগীর কী প্রয়োজন কিছুই রোগী বা তার আত্মীয়রা জিগ্যেস করার সুযোগ পেতেন না।কাউন্সিলিং এর তো প্রশ্নই আসছে না। কেউ কিছু জিগ্যেস করতে গেলে ডাক্তাররা যেন শুনতেই পেতেন না!বাড়তি প্রশ্ন করতে গেলে ধমক তো আছেই।আমি এক রোগীর আত্মীয়কে দেখেছি, যিনি রোগীকে কবে বাড়িতে নিতে পারবেন এই প্রশ্নটাই করতে পারেননি দুই সপ্তাহ ধরে চেষ্টা করেও!! আমি এতো অবাক আর ব্যথিত হয়েছিলাম! কিন্তু এটাই বাংলাদেশ।
নিজের পিএইচডি থিসিসের জন্য বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালের সার্বিক চিত্র তুলে ধরার প্রয়াস নিয়েছিলেন শাহাদুজ্জামান। সেই থিসিসটাই গল্পাকারে উপস্থাপন করেছেন তিনি। রোগী, রোগীর আত্মীয়স্বজন, ওয়ার্ডবয়, ঝাড়ুদার, দারোয়ান, নার্স, ডাক্তার প্রত্যেকের কাজ ও দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়েছে। কী অবস্থায় পড়ে রোগীরা(বিশেষত গরিব) হাসপাতালে আসে, এখানের পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে তাদের কী পরিমাণ কষ্ট করতে হয়, রোগীর আত্মীয়দের হাসপাতালের লোকজন উপদ্রব বিবেচনা করলেও কীভাবে তাদের সাহায্য ছাড়া রোগীকে আরোগ্য করা সম্ভব হয় না, প্রত্যেকে কীভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা কীভাবে প্রতিনিয়ত চুরি করে ও একজোট হয়ে হাসপাতাল জিম্মি করে রাখে, নার্সরা কীভাবে সামাজিক প্রতিকূলতা পার হয়ে এখানে কাজ করে ও রোগীদের সাথে ন্যূনতম সম্পর্কও রাখতে চায় না, ডাক্তাররা কীভাবে সারাক্ষণ অধস্তনদের ধমকের ওপর রাখে- নিজেদের আধিপত্য দেখাতে ব্যস্ত থাকে, আবার তারাই কীভাবে অল্প টাকায় উদ্ভাবনশীল উপায়ে রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে, কীভাবে অত্যল্প স্টাফ ও অপ্রতুল বাজেট নিয়ে কাজ করে অতিকষ্টে রোগীদের সেবা দিতে প্রাণান্ত পরিশ্রম করতে হয় প্রশাসনের - সবই অত্যন্ত প্রাণবন্ত ভাষায় উপস্থাপন করেছেন নৃবিজ্ঞানী শাহাদুজ্জামান। এ যেন এক টুকরো বাংলাদেশ!
লেখকের প্রধান একটি গুণ নির্মোহতা। কাউকেই দোষারোপ করেননি। শুধু যা পর্যবেক্ষণ করেছেন তা-ই তুলে ধরেছেন।
বইটা বছর বিশেক আগে লেখা। এখন পর্যবেক্ষণ করলে শাহাদুজ্জামান নতুন আরো অনেক ভয়ংকর তথ্য পেতেন। সেসব গল্প আরেকদিনের জন্য তোলা থাক।
কেন যে বইটা এতোদিন পড়বো পড়বো করেও পড়িনি! বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালে যারা পা রেখেছেন তারাই বইটার মধ্যে নিজেকে খুঁজে পাবেন।
২০১২ সালে আমাদের সমাজকর্ম বিভাগ থেকে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের জন্য এক সরকারি মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট এ পাঠানো হয়েছিলো। মানসিক রোগীদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন কাউন্সিলিং। ডাক্তাররা রাউন্ডে এসে একেক রোগীর সামনে সর্বোচ্চ এক মিনিট দাঁড়াতেন। সর্বোচ্চ! "কী অবস্থা? কী ওষুধ চলছে? ওষুধ খাওয়াতে থাকেন।ঠিক হয়ে যাবে।" ব্যস! রোগী দেখা শেষ।রোগের কী অবস্থা, রোগীর কী প্রয়োজন কিছুই রোগী বা তার আত্মীয়রা জিগ্যেস করার সুযোগ পেতেন না।কাউন্সিলিং এর তো প্রশ্নই আসছে না। কেউ কিছু জিগ্যেস করতে গেলে ডাক্তাররা যেন শুনতেই পেতেন না!বাড়তি প্রশ্ন করতে গেলে ধমক তো আছেই।আমি এক রোগীর আত্মীয়কে দেখেছি, যিনি রোগীকে কবে বাড়িতে নিতে পারবেন এই প্রশ্নটাই করতে পারেননি দুই সপ্তাহ ধরে চেষ্টা করেও!! আমি এতো অবাক আর ব্যথিত হয়েছিলাম! কিন্তু এটাই বাংলাদেশ।
নিজের পিএইচডি থিসিসের জন্য বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালের সার্বিক চিত্র তুলে ধরার প্রয়াস নিয়েছিলেন শাহাদুজ্জামান। সেই থিসিসটাই গল্পাকারে উপস্থাপন করেছেন তিনি। রোগী, রোগীর আত্মীয়স্বজন, ওয়ার্ডবয়, ঝাড়ুদার, দারোয়ান, নার্স, ডাক্তার প্রত্যেকের কাজ ও দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়েছে। কী অবস্থায় পড়ে রোগীরা(বিশেষত গরিব) হাসপাতালে আসে, এখানের পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে তাদের কী পরিমাণ কষ্ট করতে হয়, রোগীর আত্মীয়দের হাসপাতালের লোকজন উপদ্রব বিবেচনা করলেও কীভাবে তাদের সাহায্য ছাড়া রোগীকে আরোগ্য করা সম্ভব হয় না, প্রত্যেকে কীভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা কীভাবে প্রতিনিয়ত চুরি করে ও একজোট হয়ে হাসপাতাল জিম্মি করে রাখে, নার্সরা কীভাবে সামাজিক প্রতিকূলতা পার হয়ে এখানে কাজ করে ও রোগীদের সাথে ন্যূনতম সম্পর্কও রাখতে চায় না, ডাক্তাররা কীভাবে সারাক্ষণ অধস্তনদের ধমকের ওপর রাখে- নিজেদের আধিপত্য দেখাতে ব্যস্ত থাকে, আবার তারাই কীভাবে অল্প টাকায় উদ্ভাবনশীল উপায়ে রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে, কীভাবে অত্যল্প স্টাফ ও অপ্রতুল বাজেট নিয়ে কাজ করে অতিকষ্টে রোগীদের সেবা দিতে প্রাণান্ত পরিশ্রম করতে হয় প্রশাসনের - সবই অত্যন্ত প্রাণবন্ত ভাষায় উপস্থাপন করেছেন নৃবিজ্ঞানী শাহাদুজ্জামান। এ যেন এক টুকরো বাংলাদেশ!
লেখকের প্রধান একটি গুণ নির্মোহতা। কাউকেই দোষারোপ করেননি। শুধু যা পর্যবেক্ষণ করেছেন তা-ই তুলে ধরেছেন।
বইটা বছর বিশেক আগে লেখা। এখন পর্যবেক্ষণ করলে শাহাদুজ্জামান নতুন আরো অনেক ভয়ংকর তথ্য পেতেন। সেসব গল্প আরেকদিনের জন্য তোলা থাক।
Sign into Goodreads to see if any of your friends have read
একটি হাসপাতাল একজন নৃবিজ্ঞানী কয়েকটি ভাঙ্গা হাড়.
Sign In »
Reading Progress
October 5, 2022
–
Started Reading
October 5, 2022
– Shelved
October 5, 2022
–
Finished Reading
Comments Showing 1-9 of 9 (9 new)
date
newest »
message 1:
by
Momin
(new)
Oct 05, 2022 12:32PM
ভাই এখানে কি নৃতত্ত্ব নিয়ে শেখার কিছু আছে?
reply
|
flag
শুধু হাসপাতাল না, যোকোন জায়গারই একই অবস্থা। চাকরি পাবার পর সবাই নিজেদের অবস্থান ভুলে যায়, কেন তাদের নিযুক্ত করা হয়েছে সেকথা ভুলে যায়। শিক্ষকরা শিক্ষা দেয়না, ডাক্তাররা চিকিৎসা দেয়না, পুলিশরা জনগনকে হেফাজত করেনা , আরও বড় ব্যাপার হচ্ছে বিশ বছর আগের সময়ের সাথে বর্তমানের কথা কথা বিবেচনা করলে দেখা যাবে জিনিসগুলো আরও খারাপের পর্যায়ে চলে গেছে ভালো হবার বদলে। কিন্তু এটাই বাংলাদেশ।
এই বইয়ের কথা মনে হইলেই উসমানী মেডিকেলে কাটানো এক রাতের কথা মনে হয়ে যায়। কি পরিমাণ রিলেটেবল! ভাবা যায় না। কাকতালীয় ভাবে অই বই আমি পড়সি হাসপাতালে বসে বসে :3
কাকতালীয়ভাবে আমিও এই বই হাসপাতালে বসে পড়েছি গতকাল। আর আমি তিনমাস ইন্টার্নি করেছি মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটে।কত যে মিল খুঁজে পাইসি হিসাব নাই।
@হাবিবুর রহমান- পরিস্থিতি আগের চাইতে অনেক অনেক ভয়াবহ। শুধু বাচ্চা হওয়ার সময় নরমাল ডেলিভারি না করে কীভাবে সিজার অপারেশন করতে বাধ্য করে এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী সেটা নিয়েই নতুন গবেষণা হওয়া দরকার।