বিষয়বস্তুতে চলুন

স্কশিয়া সাগর

স্থানাঙ্ক: ৫৭°৩০′ দক্ষিণ ৪০°০০′ পশ্চিম / ৫৭.৫০০° দক্ষিণ ৪০.০০০° পশ্চিম / -57.500; -40.000
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
স্কশিয়া সাগর
১৯৯৬ সালে স্কশিয়া সাগরে ট্যাবুলার হিমশৈল
স্থানাঙ্ক৫৭°৩০′ দক্ষিণ ৪০°০০′ পশ্চিম / ৫৭.৫০০° দক্ষিণ ৪০.০০০° পশ্চিম / -57.500; -40.000
ধরনসমুদ্র
মহাসাগর/সমুদ্রের উৎসদক্ষিণ মহাসাগর
পৃষ্ঠতল অঞ্চল৯,০০,০০০ কিমি (৩,৪৭,৫০০ মা)
সর্বাধিক গভীরতা৬,০২২ মি (১৯,৭৫৭ ফু)
দক্ষিণ গোলার্ধে স্কশিয়া সাগরের আনুমানিক অঞ্চল

স্কশিয়া সাগর দক্ষিণ মহাসাগরের উত্তর প্রান্তে দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের সীমানায় অবস্থিত একটি সাগর। এটি পশ্চিমে ড্রেক জলপথ দ্বারা এবং উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণে একটি সামুদ্রিক শৈলশিরা স্কশিয়া আর্কের দ্বারা সীমাবদ্ধ। স্কশিয়া সাগর স্কশিয়া প্লেটের শীর্ষে বসে আছে। একটি অভিযাত্রী জাহাজ স্কশিয়ার নামানুসারে এই সাগরের নামকরণ করা হয়েছে। অনেক হিমশৈল এই সাগরে গলে গেছে। []

অবস্থান এবং বর্ণনা

[সম্পাদনা]

স্কশিয়া সাগর ড্রেক জলপথ, টিয়েরা ডেল ফুয়েগো, দক্ষিণ জর্জিয়া, দক্ষিণ স্যান্ডউইচ দ্বীপপুঞ্জ, দক্ষিণ অরকনি দ্বীপপুঞ্জ এবং অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপের দ্বারা সীমাবদ্ধ সাগর অঞ্চল। এই দ্বীপ গোষ্ঠীগুলি স্কশিয়া আর্কের উপরেই অবস্থিত, যা উত্তর, পূর্ব এবং দক্ষিণে স্কশিয়া সাগরকে ঘিরে রেখেছে। স্কশিয়া সাগর প্রায় ৯,০০,০০০ কিমি (৩,৪৭,৫০০ মা) এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। সমুদ্রের প্রায় অর্ধেকটি মহাদেশীয় মহীসোপানের উপরে দাঁড়িয়ে আছে।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

উইলিয়াম এস ব্রুসের অধীনে স্কটিশ জাতীয় অ্যান্টার্কটিক অভিযান দল (১৯০২-০৪) এই অঞ্চলে প্রথম অভিযান চালানোর সময় যে জাহাজটি ব্যবহার করেছিল, সেই জাহাজটির নামেই ১৯৩২ এই অঞ্চলের নাম দেওয়া হয়েছিল স্কশিয়া সাগর। ১৯১৬ সালে এই হিমশীতল সমুদ্রে স্যার আর্নেস্ট শ্যাকলেটটনের নেতৃত্বে পাঁচ জন অভিযাত্রী লাইফবোট জেমস কায়ার্ড নিয়ে একটি বিখ্যত অভিযান করেছিল; তারা এলিফ্যান্ট দ্বীপ থেকে লাইফবোট নিয়ে অভিযান শুরু করে দু'সপ্তাহ পরে দক্ষিণ জর্জিয়াতে পৌঁছেছিল।

আর্জেন্টিনায় স্কশিয়া সাগরটিকে মার আর্জেন্টিনো নামে পরিচিত একটি অঞ্চলের অংশ হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং বেশ কয়েকটি অঞ্চল যেমন দক্ষিণ জর্জিয়া এবং ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ এই অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে। আর্জেন্টিনা এই অঞ্চলগুলি দাবি করলেও, সেখানে শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এই অঞ্চলের মালিকানা নিয়ে আর্জেন্টিনার বিরোধ রয়েছে।

উদ্ভিদ ও প্রাণীজগত

[সম্পাদনা]

স্কশিয়া সাগরের সীমানাবর্তী দ্বীপগুলি পাথুরে এবং আংশিকভাবে বরফ এবং তুষার বর্ষায় আচ্ছন্ন থাকে; এই কঠোর পরিস্থিতি সত্ত্বেও, দ্বীপপুঞ্জগুলিতে গাছপালার অস্তিত্ব আছে এবং এই অঞ্চলকে স্কশিয়া দ্বীপপুঞ্জ তুন্দ্রা অঞ্চল হিসাবে অভিহিত করা হয়। এই অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ জর্জিয়া, আগ্নেয়গিরিময় দক্ষিণ স্যান্ডউইচ দ্বীপপুঞ্জ এবং স্কশিয়া সাগরের দক্ষিণ অরকনিস দ্বীপপুঞ্জ এবং সুদূর দক্ষিণের অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপের নিকটবর্তী শিটল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ এবং বোভেট দ্বীপ নামক ছোট বিচ্ছিন্ন আগ্নেয়গিরি। এই সমস্ত দ্বীপপুঞ্জ অ্যান্টার্কটিক অভিমুখে নীচের শীতল সমুদ্রের মধ্যে অবস্থিত। এই অঞ্চলগুলিতে মসবর্গীয় গাছ, লাইকেন এবং শৈবাল সমন্বিত তুন্দ্রা অঞ্চলের উদ্ভিদের দেখা পাওয়া যায়, এবং সামুদ্রিক পাখি, পেঙ্গুইন এবং সিলের দেখাও পাওয়া যায় এই অঞ্চলে।

এখানে পাওয়া পেঙ্গুইন প্রজাতির মধ্যে বিশেষত দক্ষিণ জর্জিয়াতে প্রচুর সংখ্যক রাজপেঙ্গুইন রয়েছে; পাশাপাশি চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইন, ম্যাকারনি পেঙ্গুইন, ভেন্টু পেঙ্গুইন, অ্যাডেলি পেঙ্গুইন এবং রকহোপার পেঙ্গুইন ( ইউডিপেটস ক্রিসোকোম ) ইত্যাদিও রয়েছে

হুমকি এবং সংরক্ষণ

[সম্পাদনা]
স্কটিয়া সমুদ্রের মানচিত্র। শীর্ষশ্রেণী: বোঝাপড়া ত্রাণ, সামুদ্রিক, কাছের জমি, দেশ এবং শহর। বিচ্ছিন্ন ব্যবধান: 2000 মি
স্কটিয়া সমুদ্রের মানচিত্র। শীর্ষশ্রেণী: বোঝাপড়া ত্রাণ, সামুদ্রিক, কাছের জমি, দেশ এবং শহর। বিচ্ছিন্ন ব্যবধান: 2000 মি

যদিও স্কশিয়া আর্ক দ্বীপগুলির জলবায়ু কঠোর প্রকৃতির এবং এই দ্বীপগুলি কখনও স্থায়ীভাবে দখল করা হয়নি, তবে দীর্ঘদিন ধরে সামুদ্রিক মাছ ধরা এবং সিল শিকারের কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই প্রত্যন্ত দ্বীপপুঞ্জের বন্যজীবন কৃত্রিম ভাবে দ্বীপে নিয়ে আসা অন্যান্য প্রজাতির বিশেষত প্রবর্তিত প্রজাতির উপস্থিতির কারণে হুমকির মুখে রয়েছে। যেমন দক্ষিণ জর্জিয়াতে যেখানে এমনকি (বর্তমানে সরিয়ে নেওয়া) বল্গা হরিণের মত বড় প্রাণীকেও দ্বীপে নিয়ে আসা হয়েছিল। অতিরিক্ত মাছ ধরার ফলে বাস্তুসংস্থানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ। বর্তমানে দক্ষিণ জর্জিয়া, দক্ষিণ স্যান্ডউইচ দ্বীপপুঞ্জ এবং বোভেত দ্বীপকে সংরক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তি দ্বারা সুরক্ষিত করা হয়েছে সিলদের এবং তার ফলশ্রুতিতে পশম সিল জনসংখ্যা পুনরায় বৃদ্ধি পেয়েছে॥

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Antarctica's iceberg graveyard could reveal the ice sheet's future"Science News (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৪-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-২৮