সাদাডগা প্রবালপ্রাচীর হাঙর
এই নিবন্ধটি অন্য একটি ভাষা থেকে আনাড়িভাবে অনুবাদ করা হয়েছে। এটি কোনও কম্পিউটার কর্তৃক অথবা দ্বিভাষিক দক্ষতাহীন কোনো অনুবাদক কর্তৃক অনূদিত হয়ে থাকতে পারে। |
এই নিবন্ধটির রচনা সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। কারণ ব্যাকরণ, রচনাশৈলী, বানান বা বর্ণনাভঙ্গিগত সমস্যা রয়েছে। |
সাদাডগা প্রবালপ্রাচীর হাঙর | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণী |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | Chondrichthyes |
উপশ্রেণী: | Elasmobranchii |
বর্গ: | Carcharhiniformes |
পরিবার: | Carcharhinidae |
গণ: | Triaenodon J. P. Müller & Henle, 1837 |
প্রজাতি: | T. obesus |
দ্বিপদী নাম | |
Triaenodon obesus (Rüppell, 1837) | |
Range of the whitetip reef shark | |
প্রতিশব্দ | |
Carcharias obesus Rüppell, 1837 |
সাদাডগা প্রবালপ্রাচীর হাঙর (ইংরেজি: Whitetip reef shark; বৈজ্ঞানিক নাম: Triaenodon obesus) কার্কারিনিডি পরিবারের অন্তর্গত এক প্রজাতির রেকিয়াম হাঙ্গর। প্রজাতিটি Triaenodon গণের একমাত্র সদস্য।
নামকরণ
[সম্পাদনা]Rüppell ১৮৩৭ সালে হোয়াইটটিপ রীফ হাঙ্গর কে Carcharias obesus নামে বর্ণিত করেন। এটির বর্তমানে বৈধ নাম Triaenodon obesus (Rüppell, ১৮৩৭), একই বছরে তিনি আগের নামটি পরিবর্তন করেন। এই নামটিকে একটি প্রতিশব্দ হিসেবে উল্লেখ করে এটিকে সাহিত্যে হাজির করা হয় ১৯৩৯ সালে।
ইংরেজিতে এদের যে নামে ডাকা হয়- whitetip reef shark, blunthead shark, blunt-head shark, light-tip shark, reef whitetip, reef whitetip shark, white tip reef shark, white-tip reef shark, whitetip shark, and white-tip shark আরো যেসব নাম শোনা যায়- arava (Tuamotuan), cazón স্প্যানিশ, cazón coralero trompacorta (স্প্যানিশ), daaha (সোমালি), endormi requin (ফরাসি), eno eno (Gela), faana miyaru (Maldivian), gursh (আরবি,) ikan yu (মালয়), libaax (সোমালিয়া), maog (নিউয়ান), malu (সামোয়ান), mamaru (তাহিতিয়ান,) mano lala kea (হাওয়াইয়ান), marracho de covas (পর্তুগীজ) ইত্যাদি।
বর্ণনা
[সম্পাদনা]এই প্রজাতি শরীর খুবই পাতলা গড়নের এবং এদের চেহারা একবার দেখলেই চেনা যায়। এদের মাথা ছোটো কিন্তু চওড়া। এদের চোখ ডিম্বাকৃতি এবং পৃষ্ঠদেশীয় এবং লেজের পাখনায় সাদা রংয়ের দাগ থাকে আর এই কারণে এদের নাম হয়েছে "হোয়াইটটিপ রীফ শার্ক"। এরা দিনের বেলায় গুহায় ঘুমিয়ে কাটায় এবং রাতে শিকার করার জন্য বের হয়। এরা বনি মাছ, crustaceans, এবং অক্টোপাস খেয়ে থাকে। হোয়াইটটিপ রীফ হাঙ্গর খুবই সামাজিক একটি মাছ এবং এরা বড় দল বেধে সাগরের তলায় ঘুরে বেড়ায়। এরা কোন স্থানিক প্রজাতি নয়, যদিও এরা একই এলাকায় কয়েক মাস থেকে এক বছরও কাটাতে পারে। এদের (স্ত্রী হাংগর) জরায়ু হয়। মা এর সাথে বাচ্চা অমরা সংযোগ এর মাধ্যমে টিকে থাকে। একটি নারী হাঙ্গর বছরে ১-৬ টি বাচ্চা জন্ম দিয়ে থাকে। এদের গর্ভাবস্থার সময়সীমা হয় ১০-১৩ মাস পর্যন্ত।
বিচরণ
[সম্পাদনা]হোয়াইটটিপ রীফ শার্ক প্রশান্ত মহাসাগরের বিরাট এলাকা জুড়ে বসবাস করে। দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান এবং লোহিত সাগর সহ শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, Riu Kiu দ্বীপপুঞ্জ, ফিলিপাইন, অস্ট্রেলিয়া ও নিউ গিনি সহ আরো অনেক এলাকায় এরা বিচরণ করে। এদের খুব বেশি চোখে পড়ে পলিনেশিয়া এবং হাওয়াইয়ান দ্বীপের উত্তরদিকে ও Pitcairns এর দক্ষিণপশ্চিমে। এরা পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে কোস্টা রিকা কোকোস এবং গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ ও উত্তর পনামা এর বন্ধ জলের মধ্যে থাকে। হোয়াইটটিপ রীফ শার্ক প্রশান্ত মহাসাগরের একটি খুবই সাধারণ রীফ হাঙ্গর। ব্লাকটিপ রীফ শার্ক ও গ্রেরীফ শার্ক হলো এর এমন দুটি জাতভাই যারা হোয়াইটটিপ রীফ শার্ক এর সাথেই এক এলাকায় থাকে ।
হোয়াইটটিপ রীফ হাঙ্গর পরিষ্কার, অগভীর প্রবালদ্বীপ এর পার্শ্ববর্তী জলের মধ্যে বসবাস করতে ভালোবাসে। এমনিতে এরা ৪-৪০ মিঃ (২৬-১৩০ ফুট) গভীর জলে থাকতে ভালোবাসে তবে এদের ১,০৮৩ ফুট গভীর জলেও থাকতে দেখা গেছে। এরা পৃষ্ঠদেশে খুব কমই আসে গভীর জলেই বেশি থাকে। এই হাঙ্গর দীর্ঘ সময়ের জন্য গতিশূন্য হয়ে জলের তলায় থাকতে সক্ষম। কখনও কখনও এরা সারিবদ্ধ ভাবে চলাফেরা করলে একসাথে এদের স্তূপাকৃতির মতো মনে হয়। হোয়াইটটিপ রীফ হাঙ্গর রাতে সক্রিয় হয়ে ওঠে। এসময় এদের আনাগোনা বাড়ে।
জীববিদ্যা
[সম্পাদনা]এই ক্ষুদ্র হাঙ্গরটির মাথা চওড়া চ্যাপটা এবং সরু। এদের তুণ্ড বৃত্তাকার হয় এবং চোখ হয় আনুভূমিকভাবে ডিম্বাকার । এদের প্রথম পৃষ্ঠীয় পাখনা ও মুক্ত বক্ষীয় পাখনা এর ডগায় সাদা রং এর টিপ উৎপন্ন হয়। দ্বিতীয় পৃষ্ঠীয় পাখনা এমনিতেই বড় হয়, কিন্তু প্রথম পৃষ্ঠদেশীয় চেয়ে অনেকটা ছোটো হয়। এদের বক্ষীয় পাখনা চওড়া এবং ত্রিকোণ আকৃতির হয়, পায়ু পাখনা দ্বিতীয় পৃষ্ঠীয় পাখনার থেকে একটু বড় হয়।
হোয়াইটটিপ রীফ হাঙ্গর এর নাম দেওয়া হয়েছে এদের পৃষ্ঠদেশীয় এবং লেজের পাখনার উপরের অংশে সাদা টিপের জন্য। এদের শরীরের রং গাঢ় ধূসর, শরীরে ছোট গাঢ় দাগ দেখা যায়। পাখনা ছাড়াও সাদা টিপ থাকতে পারে তবে সব সময় থাকতে হবে এমন কথা নেই, নাও থাকতে পারে। অনেক সময় অনেকে হোয়াইটটিপ রীফ শার্ক ও সিলভারটিপ রীফ শার্ক চিনতে ভুলকরে। সিল্ভারটিপ রীফ শার্ক এরও প্রথম পৃষ্ঠদেশীয় এবং দ্বিতীয় পৃষ্ঠীয় পাখনায় অনেকটা সাদার মত দেখতে রূপালি দাগ থাকে। এদের Tricuspid এর দাঁত বড় ও ত্রিকোণ আকার হয়। মধ্যবর্তী দাঁত গুলো ছোটো হয় ও দুই পাশে সাজানো থাকে।
প্রাপ্তবয়স্ক একটা হোয়াইটটিপ রীফ হাঙ্গর ৫.২৫ ফুট থেকে শুরু করে ৭ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। অন্য সব হাঙ্গরের মতো এদের নারীরা পুরুষদের থেকে বড় হয়। পরিণত একটি পুরুষ ৩.৪ ফুট থেকে ৫.৫ ফুট এর মধ্যে হয়ে থাকে এবং পরিণত একটি নারী হাঙ্গর এর আকার হয় ৩.৫৭ ফুট থেকে ৫.১৮ ফুট। এখানে একটা জিনিস খেয়াল করার মতো যে পুরুষরা নারীদের থেকে আকারে খুব বেশি ছোট হয়না। ধরা পড়া সব থেকে বড়ো হোয়াইটটিপ রীফ হাঙ্গর এর অকার ছিলো ৭ ফুট(২.১৩ মিটার)। এই প্রজাতির হাঙ্গর সর্বোচ্চ ২৫ বছর বাঁচে।
এই হাঙ্গর গুহা এবং জলের একদম তলায় বসবাসকারী শিকার ধরে। প্রাথমিকভাবে এদের শিকারের ভিতর পড়ে অক্টোপাস, গলদা-চিংড়ি এবং কাঁকড়া। এরা আরো খায় eels, squirrelfishes, snappers, damselfishes, parrotfishes, surgeonfishes এবং triggerfishes। রাতের বেলায় এই হাঙ্গর খুব সক্রিয় হয়ে ওঠে। তখনই এরা শিকার ধরতে বের হয়। এমনিতে দিনের বেলা একটা সাধারণ টুনা মাছ ও এদের তাড়িয়ে দিতে পারে। কোনো শিকার নাগালের ভিতর এলেই এরা দ্রুত সেটিকে অনুসরণ করে ধরে ফেলে। অনেক সময় শিকারের শরীর থেকে আসা বৈদ্যুতিক সংকেত থেকে এরা লুকিয়ে থাকা শিকার খুজে বের করতে পারে। এদের শরীরের গঠন, শক্ত চামড়া, ভোঁতা তুণ্ড এবং প্রতিরক্ষামূলক চোখ এদেরকে কুশলী শিকারীতে পরিণত করেছে।
প্রজনন
[সম্পাদনা]প্রজননের সময় পুরুষ হাঙ্গর নারী হাঙ্গরের পাশে খুবই গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুরুষ হাঙ্গর মিলনের সময় নারী হাঙ্গরকে মুখ দিয়ে কামড়ে ধরে রাখে। এটি একটি বিপজ্জনক প্রক্রিয়া। অনেকসময় নারী হাঙ্গরের শরীরে আঘাত লাগে, এমনকি নারী হাঙ্গরটি মারাও যেতে পারে। একটি নারী হাঙ্গর পরপর অনেক গুলো পুরুষ হাঙ্গরের সাথে যৌন মিলন ঘটায়। এমনকি একসাথে একের অধিক পুরুষ হাঙ্গরের সাথেও একটি নারী হাঙ্গরকে যৌন মিলন করতে দেখা গেছে। শুক্রাণু ছাড়াও নারী দেহে সাগরের জল ও কিছু হরমোন যায়, যা নারী হাঙ্গরকে পরের দিন গুলোতে নানভাবে সাহায্য করে।দেখা গেছে যে পুরুষের শুক্রাণু ক্ষমতা বেশি তার থেকেই জন্ম নেয় নতুন বাচ্চা।
৫ বছর বয়স হলে এবং আকার প্রায় ১৫০ সেমি হলে নারী ও পুরুষ উভয় প্রজননক্ষম হয়। এদের গর্ভধারণের সময়সীমা হয় ১০-১৩ মাস। এরা একবারে ১-৬ টি বাচ্চা দেয়। এরা জরায়ুতে হয়, মা এর সাথে বাচ্চা প্ল্যাসেন্টাল সংযোগ এর দ্বারা টিকে থাকে। যখন বাচ্চা মা এর শরীর থেকে বের হয় তখন এদের আকার ২০.৫-২৩.৬ ইঞ্চির (৫১-৬০ সেমি) মত হয়। প্রজনন এবং জন্মের সময় ঋতুর উপর নির্ভরশীল।
গুরুত্ব
[সম্পাদনা]বাণিজ্যিক কারণে জেলেরা এটিকে ধরতে চায় না। বাণিজ্যিক দিক দিয়ে এটির গুরুত্ব খুবই কম। যকৃত এর জন্য এটিকে খুব কম পরিমাণে ধরা হয়। তবে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র(Marine Ecosystem)রক্ষায় এদের গুরুত্ব অনেক।
মানুষের মিথস্ক্রিয়া
[সম্পাদনা]এই হাঙ্গর মানুষের কাছে সহজে আসতে চায় না এবং এদের দাঁত খুবই ছোটো হয়। হোয়াইটটিপ রীফ শার্ক মানুষের প্রতি খুব কমই আক্রমণাত্মক মনোভাব দেখায়। যদিও সাঁতারুরা এদের কাছে গেলে তদন্ত করে দেখে নেন অনেক সময়। এরা তুলনামূলকভাবে নিরীহ হয়। এই প্রজাতির হাঙ্গরকে খাবারের জন্য ধরা হয়। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) একে প্রায়-বিপদগ্রস্ত মাছের লাল তালিকায় স্থান দিয়েছেন।[২]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Smale, M.J. (2005). Triaenodon obesus. 2008 IUCN Red List of Threatened Species. IUCN 2008. Retrieved on July 15, 2009.
- ↑ Fowler, S.L., R.D. Cavanagh, M. Camhi, G.H. Burgess, G.M. Cailliet, S.V. Fordham, C.A. Simpfendorfer, and J.A. Musick (২০০৫)। Sharks, Rays and Chimaeras: The Status of the Chondrichthyan Fishes। International Union for Conservation of Nature and Natural Resources। পৃষ্ঠা 314। আইএসবিএন 2-8317-0700-5।