ওয়েন চেম্বারলেইন
ওয়েন চেম্বারলেইন | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ | (বয়স ৮৫)
জাতীয়তা | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
মাতৃশিক্ষায়তন | ডার্টমাউথ কলেজ ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো |
পরিচিতির কারণ | কণা পদার্থবিজ্ঞান |
পুরস্কার | পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৫৯ |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | পদার্থবিজ্ঞান |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | Los Alamos National Laboratory |
ওয়েন চেম্বারলেইন (ইংরেজি: Owen Chamberlain) (১০ই জুলাই, ১৯২০ - ২৮শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৬) প্রখ্যাত মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি ১৯৫৯ সালে জার্মান-ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী এমিলিও জিনো সেগরে-র সাথে যৌথভাবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। [১][২] তারা একসাথে প্রতিপ্রোটন নামক মৌলিক কণা আবিষ্কার করেছিলেন।
জীবন ও কর্ম
[সম্পাদনা]চেম্বরলেইনের জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রানসিস্কো-তে। তিনি ১৯৩৭ সালে ফিলাডেলফিয়ার জার্মানটাউন ফ্রেন্ড্স স্কুল থেকে স্নাতক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর ডার্টমাউথ কলেজ এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলিতে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশোনা করেন। ডার্টমাউথ কলেজে অধ্যয়নের সময় তিনি সেখানকার থিটা কাই ভ্রাতৃসংঘের সদস্য ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি স্কুলে পড়াশোনা করছিলেন বা কর্মরত ছিলেন। ১৯৪২ সালে তিনি ম্যানহাটন প্রকল্পে যোগ দেন, যেখানে তিনি ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী এমিলিও জিনো সেগরে-র সাথে কাজ করতেন। তারা ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলি এবং নিউ মেক্সিকোর লস আলামোসে একসাথে গবেষণা করেছেন। ১৯৩৩ সালে চেম্বারলেইন বিয়াট্রিস ব্যাবেট কপারকে বিয়ে করেন এবং তাদের সংসারে ৪ সন্তানের জন্ম হয়।
১৯৪৬ সালে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার পর, চেম্বারলেইন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে তার ডক্টরেট গবেষণা চালিয়ে যেতে থাকেন। সে সময় তিনি কিংবদন্তিসম পদার্থবিজ্ঞানী এনরিকো ফের্মির অধীনে গবেষণা করতেন। ফের্মি ছিলেন চেম্বারলেইনের জীবনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একজন শিক্ষক ও পথপ্রদর্শক। ফের্মির প্রেরণাতেই চেম্বারলেইন অধিক সম্মানজনক তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণা ত্যাগ করে পরীক্ষণমূলক পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণায় আত্মনিয়োগ করেন, যা তাকে পরবর্তীকালে সফলতা এনে দেয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চেম্বারলেইন ১৯৪৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
গবেষণাকর্ম শেষে ১৯৪৮ সালেই চেম্বারলেইন বার্কলিতে ফিরে গিয়ে সেখানকার পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষকতায় যোগ দেন। ১৯৫৮ সালে তিনি এ বিভাগের অধ্যাপক পদে উন্নীত হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সেগরেসহ অন্যান্য পদার্থবিজ্ঞানীরা প্রোটন-প্রোটন বিক্ষেপণ নিয়ে গবেষণা করেছিলেন। ১৯৫৫ সালে প্রোটন বিক্ষেপণের ধারাবাহিক কিছু পরীক্ষা শেষে তারা প্রতিপ্রোটন নামক একটি মৌলিক কণা আবিষ্কার করেন যা বৈশিষ্ট্যসহ সব দিক দিয়ে হুবহু প্রোটনের মত, কেবল এর আধান ঋণাত্মক। এই আবিষ্কারের পরে চেম্বারলেইন সময় অভিক্ষেপ চেম্বার (Time projection chamber - TPC) নিয়ে গবেষণা করেন এবং স্ট্যানফোর্ড রৈখিক ত্বরক কেন্দ্রে (Stanford Linear Accelerator Center - SLAC) কাজ করেন।
১৯৮৫ সালে চেম্বারলেইনের পারকিনসন্স রোগ ধরা পড়ে এবং ১৯৮৯ সালে তিনি শিক্ষকতা থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এই রোগের জটিলতায় ভুগতে ভুগতেই তিনি ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে ৮৫ বছর বয়সে ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলিতে মৃত্যুবরণ করেন।
রাজনৈতিক আদর্শ
[সম্পাদনা]শান্তি এবং সামাজিক ইস্যু নিয়ে চেম্বারলেইন রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন। তিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। চেম্বারলেইনের জীবদ্দশায় তিনজন রুশ বিজ্ঞানী শাখারভ, অরলভ ও স্কারানস্কিকে তাদের রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে জেলে বন্দী করা হয়। তাদেরকে সমর্থন করে বিজ্ঞানীরা যে আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করেন তার নাম ছিল "সাইন্টিস্ট্স ফর শাখারভ, অরলভ অ্যান্ড স্কারানস্কি"। এই আন্দোলনের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা ছিলেন চেম্বারলেইন। এছাড়া ১৯৮০-র দশকে তিনি নিউক্লীয় নীরস্ত্রীকরণ আন্দোলন প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Jaros, John; Nagamiya, Shoji; Steiner, Herbert (আগস্ট ২০০৬)। "Obituary: Owen Chamberlain"। Physics Today। 59 (8): 70–72। ডিওআই:10.1063/1.2349741 । বিবকোড:2006PhT....59h..70J।
- ↑ "The Nobel Prize in Physics 1959"। NobelPrize.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-১০।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- ১৯২০-এ জন্ম
- ২০০৬-এ মৃত্যু
- মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী
- পরীক্ষণমূলক পদার্থবিজ্ঞানী
- ম্যানহাটন প্রকল্পের ব্যক্তিত্ব
- নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী
- মার্কিন নোবেল বিজয়ী
- ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলির প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- ২০শ শতাব্দীর মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য
- আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটির বিশিষ্ট সভ্য
- পারকিনসন রোগে মৃত্যু