বিষয়বস্তুতে চলুন

অঁদ্রে মাল্‌রো

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

অঁদ্রে মাল্‌রো
১৯৭৪ সালে অঁদ্রে মাল্‌রো
১৯৭৪ সালে অঁদ্রে মাল্‌রো
স্থানীয় নাম
André Malraux
জন্ম(১৯০১-১১-০৩)৩ নভেম্বর ১৯০১
প্যারিস, ফ্রান্স
মৃত্যু২৩ নভেম্বর ১৯৭৬(1976-11-23) (বয়স ৭৫)
Créteil, ফ্রান্স
পেশা
  • লেখক
  • কূটনীতিজ্ঞ ব্যক্তি
ভাষাফরাসি
জাতীয়তাফ্রান্স
নাগরিকত্বফরাসি
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিলা কন্ডিশন হিউমনি (ম্যান'স ফেট) (১৯৩৩)
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারপ্রিক্স গনকোর্ট
দাম্পত্যসঙ্গী
  • ক্লারা গোল্ডশিমিৎ
  • জোসেত ক্লোসেৎ
  • মারি-মেডেলিন লিয়াওখ
সন্তান
  • ফ্লোরেন্স
  • পিয়েরে-গঁতিয়ার
  • ভিনসেন্ট
১৯৩৩ সালে অঁদ্রে মাল্‌রো

অঁদ্রে মালরো ডিএসও (ফরাসি : [ɑ̃dʁe malʁo]; নভেম্বর ৩, ১৯০১ – নভেম্বর ২৩, ১৯৭৬) ছিলেন একজন ফরাসি ঔপন্যাসিক, প্রত্নতত্ত্ববিদ, শিল্পকলা তাত্ত্বিক এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী। যাঁর লেখা বিংশ শতাব্দীর সংস্কৃতিতে বিরাট অবদান রেখেছে।

মালরো ১৯০১ সালের ৩রা নভেম্বর প্যারিসের এক সচ্ছল পরিবারে জন্ম নেন। তিনি প্যারিসের একোল দে লঁগ ওরিয়াঁতাল (l'École des Langues orientales, বর্তমান নাম Institut national des langues et civilisations orientales)-এ শিক্ষা লাভ করেন। ১৯২৩ সালে ২১ বছর বয়সে প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার কাজে তিনি সস্ত্রীক ইন্দোচীন উপদ্বীপের ক্যাম্বোডিয়াতে যান। সেখানে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে আন্নামীয়দের স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি সক্রিয় হয়ে পড়েন। ১৯২৫-২৭ সালে চীনের গৃহযুদ্ধে তিনি কুওমিন্তাংয়ের পক্ষে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। মালরো তার এশীয় অভিজ্ঞতাকে পটভূমি করে তিনটি উপন্যাস লেখেন: লে কোঁকেরঁ Les Conquérants (১৯২৮), লা ভোয়া রইয়াল La Voie royale (১৯৩০) এবং লা কোঁদিসিওঁ উমেন La Condition humaine (১৯৩৩)। এদের মধ্যে শেষেরটি মর্যাদাপূর্ণ প্রি গোঁকুর (Prix Goncourt) পুরস্কার জেতে এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতি কুড়ায়। হিটলারের অধীন জার্মানিতে ভ্রমণের পর লেখেন তার পরবর্তী উপন্যাস ল্য তঁ দু মেপ্রি Le Temps du mépris (১৯৩৫)। ১৯৩৬-১৯৩৯ সালে রাজার অণুগত হয়ে স্পেনের গৃহযুদ্ধে যোগ দেন। সেখানে তিনি একটি স্কোয়াড্রনের বিমানচালক ছিলেন। এই গৃহযুদ্ধের অভিজ্ঞতাকে আশ্রয় করে তিনি লেখেন লেস্পোয়ার L'Espoir (১৯৩৭) নামের উপন্যাস।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মালরো স্বেচ্ছাসেবী প্রাইভেট হিসেবে অংশ নেন। তাকে জার্মানরা বন্দী করে, কিন্তু তিনি পালিয়ে যান। এরপর তিনি ফরাসি প্রতিরোধের একজন কর্নেল হিসেবে কাজ করেন এবং পুনরায় বন্দী হন। প্রথম জীবনে সাম্যবাদের সাথে জড়িত থাকলেও ১৯৪৫-১৯৪৬ সালে তিনি ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি শার্ল দ্য গোলের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্যসচিব হন। ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি ফ্রান্সের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন। এরপর তিনি অবসর জীবনে চলে যান এবং প্যারিসের এক শহরতলীতে বাস করা শুরু করেন। ১৯৭৬ সালের ২৩শে নভেম্বরে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি লেখালেখি চালিয়ে যান।

মালরো নন্দনতত্ত্বের উপর প্রচুর লিখেছেন। তার প্‌সিকোলোজি দ্য লার Psychologie de l'art (১৯৪৭-৪৯) নন্দনতত্ত্বের উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ। এটি পরবর্তীকালে সংক্ষিপ্তাকারে লে ভোয়া দু সিলঁস Les Voix du silence (১৯৫১) নামে প্রকাশিত হয়। এছাড়া লা মেতামর্ফোজ দে দিও La Métamorphose des dieux (তিন খণ্ড, ১৯৫৭, ১৯৭৪, ১৯৭৬) এবং ল্য ত্রিয়ঁগ্ল নোয়ার Le Triangle noir (১৯৭০) গ্রন্থগুলিও শিল্পকলার উপর লেখা। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থের মধ্যে আছে লে নোয়াইয়ে দু লালতেনবুর্গ Les Noyers de l'Altenburg (১৯৪৮)।

মালরো তার সমসাময়িক ঘটনাবলির সাথে পূর্ণভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৬৭ সালে তার আত্মজীবনী অঁতিমেমোয়ার Antimémoires-এর প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়। ১৯৭২ সালে প্রকাশিত লে শেন কোঁ আবা Les Chênes qu'on abat ছিল জীবদ্দশায় প্রকাশিত তার শেষ গ্রন্থ।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মিত্র মালরো

[সম্পাদনা]

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মালরো ছিলেন বাংলাদেশের বন্ধু। ১৯৭১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশের জন্য যুদ্ধ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত তৈরীতে ভূমিকা রাখেন। তার এই অবদানের জন্য পরে বাংলাদেশ সরকার তাকে ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননায়’ ভূষিত করে। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের এপ্রিল মাসে মালরো বাংলাদেশ সফর করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মালরোকে সাম্মানিক ডিলিট উপাধি প্রদান করে। ২০১৫ সালে তার স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মালরো গার্ডেন’ উদ্বোধন করা হয়।[][]

মালরো গার্ডেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মল

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:Iw-ref

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]