পোর্টাল শিরা বা হেপাটিক পোর্টাল শিরা ( এইচপিভি ) হলো একটি রক্তনালী যা প্লীহা থেকে পরিপাক নালি, পিত্তথলি, অগ্ন্যাশয় এবং যকৃতে রক্ত সরবরাহ করে। যকৃতের মোট রক্ত প্রবাহের প্রায় ৭৫% পোর্টাল শিরার মাধ্যমে হয়। বাকি ২৫% রক্তপ্রবাহ হেপাটিক ধমনীর মাধ্যমে হয়।

পোর্টাল শিরা
পোর্টাল শিরা এবং এর শাখাগুলো দেখানো হয়েছে। সুপিরিয়র মেসেন্ট্রেরিক শিরা, ইনফিরিয়র মেসেন্ট্রেরিক শিরা এবং প্লীহা শিরা দ্বারা পোর্টাল শিরা গঠিত হয়। পূর্বে পোর্টাল শিরাকে লিনিয়াল শিরা নামে ডাকা হতো।
বিস্তারিত
তন্ত্রহেপাটিক পোর্টাল সিস্টেম
শুরুর স্থলপরিপাক নালি, প্লীহা, অগ্ন্যাশয়
উৎসপ্লীহা শিরা, সুপিরিয়র মেসেন্ট্রেরিক শিরা, ইনফিরিয়র মেসেন্ট্রেরিক শিরা, অগ্ন্যাশয় শিরা
সমাপ্তির স্থলযকৃতের সাইনুসয়েড
শনাক্তকারী
লাতিনvena portae hepatis
মে-এসএইচD011169
টিএ৯৮A12.3.12.001
টিএ২5092
এফএমএFMA:50735
শারীরস্থান পরিভাষা

পোর্টাল শিরা সত্যিকারের শিরা নয়। কারণ এটি হৃৎপিণ্ডে রক্ত সরবরাহ না করে সরাসরি যকৃতের কৈশিকনালীতে রক্ত সরবরাহ করে। পোর্টাল শিরা মানবদেহের হেপাটিক পোর্টাল সিস্টেমের একটি প্রধান উপাদান। মানবদেহে দুটি পোর্টাল ভেনাস সিস্টেম রয়েছে।

পোর্টাল শিরা সাধারণত সুপিরিয়র মেসেন্ট্রেরিক শিরা , প্লীহা শিরা, ইনফিরিয়র মেসেন্ট্রেরিক শিরা, বাম ও ডান গ্যাস্ট্রিক শিরা এবং অগ্ন্যাশয় শিরা এর সংমিশ্রণ দ্বারা গঠিত হয়।

পোর্টাল শিরার সাথে সংশ্লিষ্ট জটিলতাগুলো অনেক মারাত্মক হয়। এমনকি মৃত্যুর কারণও হয়ে থাকে। এছাড়া পোর্টাল হাইপারটেনশন যকৃতের সিরোসিসের একটি বড় জটিলতা।

কাঠামো

সম্পাদনা

প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে পোর্টাল শিরার দৈর্ঘ্য প্রায় ৮ সেমি (৩ ইঞ্চি) [][]

পোর্টাল শিরা এবং হেপাটিক ধমনী যকৃতে দ্বৈত রক্ত সরবরাহ করে। যকৃতের মোট রক্ত প্রবাহের প্রায় ৭৫% পোর্টাল শিরা দ্বারা হয়। বাকি ২৫% রক্তপ্রবাহ হেপাটিক ধমনী দ্বারা হয়। []

পোর্টাল শিরা বেশিরভাগ শিরা থেকে পৃথক। কারণ এটি হৃৎপিণ্ডে রক্ত সরবরাহ করে না। বরং এটি একটি পোর্টাল ভেনাস সিস্টেমের অংশ। এটি শিরার রক্তকে যকৃতের হেপাটিক সাইনুসয়েডের কৌশিকনালীতে সরবরাহ করে। পরিপাক নালি থেকে যকৃতে রক্ত সরবরাহ করার সময়, পোর্টাল শিরা দুটি কাজ সম্পাদন করে। প্রথমত এটি রক্তের বিষাক্ত পদার্থগুলো সিস্টেমিক রক্ত সংবহনে ছাড়ার আগেই হেপাটোসাইট(যকৃত কোষ) দ্বারা নির্বিষ করে। দ্বিতীয়ত যকৃত দ্বারা পরিপাক নালিতে সবেমাত্র গ্রহণ করা খাবার থেকে পুষ্টি গ্রহণ করে।

ক্লিনিকাল গুরুত্ব

সম্পাদনা

পোর্টাল শিরাতে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়াকে বলা হয় পোর্টাল হাইপারটেনশন। এটি যকৃতের রোগের একটি প্রধান জটিলতা। যকৃত সিরোসিস,[] পোর্টাল শিরার ব্যাস (১৩ বা ১৫ মিমি এর বেশি ব্যাস) বৃদ্ধি এবং সংবেদনশীলতাও পোর্টাল হাইপারটেনশনের চিহ্ন। [] ডপলার আলট্রাসনোগ্রাফিতে, প্রধান পোর্টাল শিরার (এমপিভি) সর্বোচ্চ সিস্টোলিক বেগ ২০ থেকে ৪০ সেমি/সেকেন্ড এর মধ্যে থাকে। [] পোর্টাল শিরার সিস্টোলিক বেগ <১৬ সেমি/সেকেন্ড হলে তাকে পোর্টাল হাইপারটেনশন বলে চিহ্নিত করা হয়।

পোর্টাল হাইপারটেনশনের ক্লিনিকাল লক্ষণগুলোর মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী যকৃত রোগগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এগুলো হলো অ্যাসাইটেস, এসোফেজিয়াল ভ্যারাইস, স্পাইডার নেভি, ক্যাপ্ট মেডুসি এবং পামার এরিথেমা । []

 
৫ সেকেন্ডের বেশি সময় ধরে পোর্টাল শিরাতে ডপলার আলট্রাসনোগ্রাফি করা হয়েছে

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Harold M Chung; Chung, Kyung Won (২০০৮)। Gross anatomy। Wolters Kluwer Health/Lippincott Williams & Wilkins। পৃষ্ঠা 208আইএসবিএন 978-0-7817-7174-0 
  2. Plinio Rossi; L. Broglia (২০০০)। Portal Hypertension: Diagnostic Imaging and Imaging-Guided Therapy। Springer। পৃষ্ঠা 51। আইএসবিএন 978-3-540-65797-2 
  3. Dooley, James; Sherlock, Sheila (২০০২)। Diseases of the liver and biliary system। Blackwell Science। আইএসবিএন 978-0-632-05582-1 
  4. Al-Nakshabandi NA (২০০৬)। "The role of ultrasonography in portal hypertension": 111–7। ডিওআই:10.4103/1319-3767.29750 পিএমআইডি 19858596 
  5. Iranpour, Pooya; Lall, Chandana (২০১৬)। "Altered Doppler flow patterns in cirrhosis patients: an overview": 3–12। আইএসএসএন 2288-5919ডিওআই:10.14366/usg.15020পিএমআইডি 26169079পিএমসি 4701371  
  6. Key Topics in General Surgery (2 সংস্করণ)। Informa Healthcare। ২০০২। আইএসবিএন 978-1-85996-164-3 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা